Header Ads Widget

হাদিসে এসেছে নারীরা বেশী জাহান্নামে যাবে। এর মাধ্যমে কি তাদের বঞ্চিত করা হয় নি?

 হাদিসে এসেছে নারীরা বেশী জাহান্নামে যাবে। এর মাধ্যমে কি তাদের বঞ্চিত করা হয় নি?


হাদিস নিয়ে নাস্তিকদের অপব্যাখ্যা ও তার জবাবঃ-

প্রশ্নঃ-

হাদিসে এসেছে নারীরা বেশী জাহান্নামে যাবে। এর মাধ্যমে কি তাদের বঞ্চিত করা হয় নি?


জবাবঃ-

মহাবিশ্বের পালনকর্তা অসীম মমতায় মানবজাতীকে সৃষ্টি করেছেন তার খলিফা হিসেবে।তিনি মানুষকে ভালবাসেন মমতাময়ী মায়ের চেয়েও বেশি।তিনি কারো প্রতি জুলুম বা অবিচার করেননা।ইবাদতের ক্ষেত্রে নারী পুরুষের ভেদাভেদ তিনি করেননা।তিনি তার প্রিয় বান্দা,বান্দিদের "মুমিন" হিসেবেই চিনেন! নর বা নারী হিসেবে নয়।

উল্লেখিত প্রশ্নের জবাব দেয়ার আগে জেনে নেই কারা জান্নাতে যাবে।


রাসূল (সঃ) এরশাদ করেন, যে নারী পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়বে এবং রমযানের রোযা রাখবে স্বীয় গুপ্তস্থানকে হেফাজত করবে ( পর্দা রক্ষা করে এবং ব্যভিচার থেকে বিরত থেকে) আর স্বামীর আনুগত্য করবে। এমন নারীর জন্য জান্নাতের আটটি দরজা খুলে দেয়া হবে, যে দরজা দিয়ে ইচ্ছা মত জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে। ( তিরমিযী ও তাবরানী)

উপরোক্ত হাদীস দ্বারা বুঝা যায় মেয়েদের জন্য বেহেশত গমন খুবই সহজ।


তবে অন্য এক হাদীসে বর্ণিত হয়েছে। আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) বলেন একবার ঈদুল ফিতরের দিন রাসূল (সঃ) ঈদগাহে গিয়ে উপস্থিত মহিলাদেরকে লক্ষ্য করে বললেন; হে নারী সম্প্রদায়! দান খয়রাত কর কেননা আমাকে অবগত করানো হয়েছে দোজখের অধিকাংশ অধিবাসি তোমাদের নারী সম্প্রদায়রই হবে। (দীর্ঘ হাদীসের অংশ বিশেষ ( বুখারী-মুসলিম)


কেন নারীরা জাহান্নামে যাবে?

রাসুল(সাঃ) নারীদের জাহান্নামী হওয়ার বেশ কিছু কারণ বিভিন্ন হাদিসে বর্ণনা করেন।

রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন :

“এক শ্রেণীর নারীর দল যারা কাপড় পরিধান করবে,কিন্তু তারাউলঙ্গ গণ্য হবে, কারণ, তারা এমনভাবে কাপড় পড়বে, যার কারণে শরীরের বিভিন্ন অংশ বুঝা যায়। এসব নারী নিজেরা অন্যদেরপ্রতি আকৃষ্ট হয় এবং অন্যদেরকেও নিজেদের প্রতি আকৃষ্ট করে। তারা তাদের মাথার খোঁপা উটের কুজের মত উঁচু রাখে! এসব নারী জান্নাতে তোযাবেইনা, জান্নাতের সুগন্ধও পাবে না !!!অথচ জান্নাতের সুগন্ধ এত এত দুরবর্তী স্থান থেকেও পাওয়া যাবে... কিন্তু ঐ নারীরা জান্নাতের গন্ধও পাবেনা!! [সহীহ মুসলিম,(২১২৮)]


অর্থাৎ নারীদের অপরাধের জন্যই তারা জাহান্নামে যাবে।বর্তমান সময়ে আধুনিক উগ্র নারীদের চালচলন,চলাফেরা,মিডিয়ায় তাদের অবাধ বেলেল্লাপনা,ব্যভিচার আর পর্দাহীনতার অবাধ প্রতিযোগিতা দেখলে ১৪০০ বছর আগে বর্ণিত সেই হাদিসের সত্যতা দিনের আলোর মত ফুটে উঠে।

সুবহানাল্লাহ! কেবল মাত্র একজন সত্য রাসুলের পক্ষেই এমন ভবিষ্যতবাণী করা সম্ভব।

প্রশ্ন হচ্ছে তাদের প্রতি কি অবিচার করা হবে বা নারী হওয়ার কারনেই তাদের জাহান্নামে দেয়া হবে?

কখনোই না!!

আল্লাহ্‌ বলেন--


"(আর হে নবী) যারা ঈমান এনেছে এবং সৎকর্ম করেছে, আপনি তাদেরকে এমন জান্নাতের সুসংবাদ দিন, যার পাদদেশে নহরসমূহ প্রবাহমান থাকবে। (২:২২৫)

আল্লাহ্‌ আরো বলেন--

"অবশ্যই মুসলমান পুরুষ ও মুসলমান নারী,মুমিন পুরুষ ও মুমিন নারী, অনুগত পুরুষ ও অনুগত নারী, সত্যবাদী পুরুষ ও সত্যবাদী নারী,ধৈর্যশীল পুরুষ ও ধৈর্যশীল নারী,বিনীত পুরুষ ও বিনীত নারী, দানশীল পুরুষ ও দানশীল নারী,রোযা পালনকারী পুরুষ ও রোযা পালনকারী নারী, যৌনাঙ্গ হিফাযতকারী পুরুষ ও যৌনাঙ্গ হেফাযতারী নারী, আল্লহকে অধিক স্মরণকারী পুরুষ ও অধিক স্মরণকারী নারী- এদের জন্য আল্লহ রেখেছেন ক্ষমা ও মহাপ্রতিদান।"(৩৩:৩৫)


এখানে কিন্তু নারী পুরুষ আলাদা করা হয় নি।

এ আয়াতের পর অভিযোগটা শিথিল হয়ে যায়।কিভাবে সমতা বিধান করলেন মহান আল্লহ! জান্নাতে যাওয়ার ক্ষেত্রে কোনো ভেদাভেদ রাখা হয় নি। ঈমানদার, মুমিন হোক সে নারী কিংবা পুরুষ তার জন্য রয়েছে জান্নাত।


এবার তাদের অভিযোগ আনা হাদিস নিম্নে দেওয়া হলোঃ-

ইবনে আব্বাস (রাঃ) হতে বর্নিত নবী (সাঃ) বলেছেন," আমি জান্নাতের প্রতি দৃষ্টিপাত করে দেখলাম তার অধিকাংশ অধিবাসী গরীব আর জাহান্নামের প্রতি দৃষ্টি করে দেখলাম তার অধিকাংশ অধিবাসী মহিলা।(তিরমিযী)


এখানে একটা লক্ষনীয় বিষয়, হাদিসটিতে কিন্তু বলা হয় নি যে, পুরুষরা বেশি জান্নাতে যাবে বরং গরীবরা বেশি যাবে বলা হয়েছে।তাহলে কি আপনি বলবেন, আল্লাহ্‌ ধনীদের বঞ্চিত করেছে?


তাছাড়া নারীদের জাহান্নামে বেশি যাওয়ার আরেকটি যৌক্তিক কারণ রয়েছে।কারণটি হচ্ছে নারীর আধিক্য।

এমন একটি হাদিসও রয়েছে যা ভবিষ্যতে নারীর সংখ্যা বৃদ্ধির এক সম্ভাবনার ইঙ্গিত দেয়।

নবী (সাঃ) বলেছেন- " কিয়ামতের আলামত হচ্ছে, মহিলার সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে এবং পুরুষের সংখ্যা কমে যাবে।এমনকি পঞ্চাশ জন মহিলার বিপরীতে একজন পুরুষ থাকবে।(বুখারী)


জেনিফার গ্রেভ্স নামের ওই ব্রিটিশ বিজ্ঞানী বলেছেন,পুরুষের জীন ধীরে ধীরে

সংকুচিত হচ্ছে এবং এর গতিমুখ হচ্ছে বিলুপ্তির দিকে। তিনি আরো বলেন, ছেলে সন্তান জন্মগ্রহণের জন্য প্রয়োজন যে ‘ওয়াই’ ক্রোমোজম তা দিন দিন

মারা যাচ্ছে।এমন সময় আসতে পারে যখন পুরুষের শুক্রাণুতে কেবল

থাকবে ‘এক্স’ ক্রোমোজম। ফলে জন্ম নেবে কেবল কন্যা সন্তান।

http://www.bbc.com/news/science-environment-17127617


এখন চলুন একটা হিসাবে যাই।সহীহ বুখারী থেকে আমরা জানতে পারি যে,

কেয়ামতের আগে নারীদের সংখ্যা বৃদ্ধিপাবে, নারী ও পুরুষের অনুপাত ১:৫০ হবে। আমরা একটা হিসাবের জন্য তথ্যটি ব্যবহার করতে পারি।


ধরুন প্রতি ১০০ জন পুরুষের মধ্যে ৫০ পুরুষ বেহেশতে যাবে এবং ১০০জন নারীর মধ্যে ৫০ জন বেহেশতে যাবে।

এখন নারী-পুরুষের জান্নাতে যাওয়ার অনুপাত=১ : ১।

এবং উপরের হাদিস থেকে আমরা জানতে পারি যে ১ জন পুরুষের বিপরীতে নারী ৫০ জন।অর্থ্যাৎ ১০০জন পুরুষের বিপরীতে ৫০০০জন নারী।তাহলে ১০০জন পুরুষের মধ্যে জাহান্নামে যাবে (১০০-৫০)= ৫০জন এবং বিপরীতে নারী জাহান্নামে যাবে (৫০০০-২৫০০)= ২৫০০ জন(৫০% হিসাবে)।

অর্থাৎ জাহান্নামে সমান অনুপাতে যাওয়ার পরেও নারীদের সংখ্যা অনেক বেশি হচ্ছে।

যদি ৫০% পুরুষের বিপরীতে ৮০% নারীও জান্নাতে যায় তবু সেই ২০% জাহান্নামি নারীর সংখ্যা হয় পুরুষের চেয়ে বেশি।

যদি ১০০ জনে যায় ২০ জন জাহান্নামে।

তাহলে ৫০০০ জনের মধ্যে যাবে ১০০০ জন(২০% হিসেবে)!

তাহলে দেখুন নারীর আধিক্যও কিন্তু নারীদের জাহান্নামে বেশি যাবার কারণ।মহান আল্লহ অত্যন্ত ক্ষমাশীল।নিশ্চয় তিনি মুমিন নারীদের জান্নাতের সুশীতল ছায়ায় স্থান দিবেন।রাসুল(সাঃ) নারীদের জাহান্নাম থেকে বাচার একটি সহজ পথও বাতলে দিয়েছেন" নবী (সাঃ) মহিলাদের অধিক পরিমাণে দান করতে বলেছেন, যাতে তারা জাহান্নামী না হয়(বুখারী)।



আশাকরি উত্তর পেয়েছেন।আল্লাহ্‌ আমাদের জাহান্নামের আগুন থেকে হেফাজত করুন,আমিন।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ