Header Ads Widget

কি অদ্ভুত ভবিষ্যদ্বাণী! জেনে আপনি অবাক হয়ে যাবেন!

ভবিষ্যদ্বাণী নিয়ে কৌতুহলের অন্ত
নেই। যদি সেই ভবিষ্যদ্বাণী
বাস্তবায়িত হয় তাহলে বিশ্বজুড়ে হইচই
পড়ে যায়।  বিভিন্ন সময় নানা ব্যক্তি
মানব সভ্যতার এমনই কিছু পূর্বাভাস
দিয়েছিলেন যা পরবর্তীকালে হুবহু
মিলে যায়।  আজ পর্যন্ত এর রহস্যের
মীমাংসা করতে পারেনি কোনো
যুক্তি।
১) টাইটানিকের সলিল সমাধি
১৯ শতকের সাহিত্যিক মর্গ্যান রবার্টসন
মূলত ছোট গল্পের রচয়িতা হিসেবে
পরিচিতি লাভ করেন। তার বেশির ভাগ
লেখনীই মাঝারি মানের।  একমাত্র
ব্যতিক্রম উপন্যাস ‌‘ফিউটিলিটি, অর দ্য
রেক অফ দ্য টাইটান’। এই কাহিনীতে
বিশ্বের সর্ববৃহত্ ট্রিপল-স্ক্রু প্রপেলার
বিশিষ্ট জাহাজ উত্তর আটলান্টিকে
মহাসাগরে হিমশৈলে ধাক্কা মেরে
২৫০০ যাত্রীসহ ডুবে যায়। আশ্চর্যের
বিষয়, উপন্যাস প্রকাশের ১৪ বছর পর
আটলান্টিক মহাসাগরের উত্তরে
একইভাবে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে ডুবে যায়
বিশাল যাত্রীজাহাজ আরএমএস
টাইটানিক।
২) হিটলারের জন্মের পূর্বাভাস
করেছিলেন নস্ত্রাদামু
১৫৫৫ সালে পৃথিবীর ইতিহাসে নৃশংসতম
একনায়ক অ্যাডল্ফ হিটলারের উত্থানের
ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন ফরাসি
ভবিষ্যদ্বক্তা নস্ত্রাদামু। নাত্সি
শাসকের জন্ম বৃত্তান্ত ও নিষ্ঠুরতার কথা
বলতে গিয়ে তিনি লিখেছিলেন, পশ্চিম
ইউরোপের এক শিশু যে দরিদ্র ঘরে জন্ম
নেবে এবং তার কথার মোহে আবিষ্ট
হবে বহু মানুষ। এমনকি সেই শিশুর নামও
লিখে গেছেন নস্ত্রাদামু। তবে
হিটলারের পরিবর্তে তিনি উল্লেখ
করেছিলেন ‘হিসটার’।
৩) হিরোশিমা-নাগাসাকির বিস্ফোরণ
১৯১৪ সালে তার ‘দ্য ওয়ার্ল্ড সেট ফ্রি’
উপন্যাসে মানব ইতিহাসের ভয়ঙ্করতম
সর্বনাশের কথা লিখে গেছেন
সাহিত্যিক এইচ জি ওয়েলস। ঘটনার ৩০
বছর আগেই অ্যাটমিক বোমার আঘাতে
গণহত্যার পূর্বাভাস করেছিলেন তিনি।
তিনি এ-ও জানিয়েছিলেন,
বিস্ফোরণের বহু বছর পরেও এই দুই জনপদ
বাসযোগ্য হবে না।
৪) ওকলাহোমা শহরে বোমা বিস্ফোরণ
আমেরিকার আধ্যাত্মিক মিডিয়াম
ট্যানা হয় দাবি করেছিলেন, অশরীরী
আত্মারা তাকে অদূর ভবিষ্যতের বহু
ঘটনার কথা জানিয়ে যান। বিদেহী
আত্মাদের নিজের চোখে দেখতে পান
বলেও দাবি করেন তিনি।  ১৯৯৫ সালের
এক লাইভ রেডিও অনুষ্ঠানে তিনি
জানান, ওকলাহোমা শহরের এক বাড়িতে
বিধ্বংসী বোমা বিস্ফোরণ ঘটাবে
জঙ্গিরা। ঠিক ৯০ মিনিট পর প্রচণ্ড
বিস্ফোরণে চুরমার হয়ে যায়
ওকলাহোমার অ্যালপ্রেড পি মুরাহ
ফেডেরাল বিল্ডিং। ঘটনার হোতা
টিমথি ম্যাকভেই ও তার সঙ্গীরা পরে
গ্রেপ্তার হয়।
৫) অগ্নুত্পাত, সুনামি এবং হারিকেন
ক্যাটরিনা ঘটনার
বেশকিছু দিন আগে ভারত মহাসাগরে
আগ্নেয়গিরির উদ্গীরণ এবং সুমাত্রা ও
ইন্দোনেশিয়া উপকূলে আছড়ে পড়া
ভয়ঙ্কর জলোচ্ছ্বাসের কথা
জানিয়েছিলেন পামার। ২০০৪ সালের
২৬ ডিসেম্বর সুমাত্রা, ইন্দোনেশিয়া,
ভারত, শ্রীলঙ্কা, মালয়েশিয়া সহ
বিশ্বের ১৪টি দেশে সুনামির তাণ্ডবে
প্রাণ হারান ২,৩০,০০০ মানুষ।  শুধু তাই নয়,
উত্তর কোরিয়ার পরমাণু অস্ত্র সম্ভারের
পূর্বাভাসও করেছিলেন তিনি। তবে
২০০৫ সালের হারিকেন ক্যাটরিনা
সম্পর্কে ভবিষ্যদ্বাণী মিলে যাওয়ার
পরেই জনপ্রিয় হন পামার।
৬) নিজের হত্যাকাণ্ডের কথা আগাম
জেনেছিলেন লিঙ্কন
আঁততায়ীর গুলিতে মৃত্যুর দুই সপ্তাহ আগে
হত্যাকাণ্ডের গোটা দৃশ্য স্বপ্নে
দেখেছিলেন সাবেক মার্কিন
প্রেসিডেন্ট আব্রাহাম লিঙ্কন। দীর্ঘ
গৃহযুদ্ধের আবহে প্রাত্যহিক মানসিক
চাপে থাকা প্রেসিডেন্টের পক্ষে
দুঃস্বপ্ন দেখা অস্বাভাবিক না হলেও
ঘটনাটি বিস্ময় উদ্রেক করে।  ঘুম থেকে
উঠে তিনি জানিয়েছিলেন, স্বপ্নে
নিজেকে একটি সিঁড়ি দিয়ে নামতে
দেখেন।  চারিদিকে মৃত্যুকালীন
নীরবতা বিরাজ করছিল। শুধু কোথাও
কারো ফুঁপিয়ে কান্নার শব্দ ভেসে
এসেছিল বলেও তিনি জানান।
৭) দীর্ঘায়িত জীবন, ন্যানো প্রযুক্তি,
ডিজাইনার ড্রাগস
গ্যাসের আচরণ সম্পর্কিত গবেষণার
জন্যই বিশ্বখ্যাত বিজ্ঞানী রবার্ট
বয়েল। তার আবিষ্কৃত তত্ত্ব ‘বয়েলস ল’
নামে প্রসিদ্ধ। সপ্তদশ শতকের এহেন
উদ্ভাবনী জ্যোতিষ্কের মৃত্যু হয় ১৬৯১
সালে। তিনি মারা যাওয়ার পর
বিজ্ঞানীর হস্তাক্ষরযুক্ত একটি দীর্ঘ
তালিকা খুঁজে পায় ইংল্যান্ডের রয়্যাল
সোসাইটি। ওই তালিকায় ভবিষ্যতে
ঘটবে এমন বেশকিছু পূর্বাভাস পাওয়া
যায়। তালিকায় বয়েল ‘মানুষের গড় আয়ু
বৃদ্ধি’, ‘উড়ান প্রযুক্তি’ ও ‘চিরস্থানী
আলো’ আবিষ্কারের পূর্বাভাস
করেছিলেন। সেইসঙ্গে ঘুমের বড়ি,
কৃত্রিম উত্তেজক, অবসাদ দূর করার ওষুধ
এবং কল্পনাশক্তি বৃদ্ধির ওষুধ
উদ্ভাবনের কথাও লিখে রেখেছিলেন।
৮) ইন্টারনেট সম্পর্কে ভবিষ্যদ্বাণী
১৯০৯ সালে ‘দ্য মেশিন স্টপস’ গল্পে
ব্রিটিশ লেখক এ এম ফর্স্টার এমন এক
ভবিষ্যত্ প্রজন্মের কথা লিখেছিলেন
যারা নিজেদের মধ্যে ইন্টারনেটের
মাধ্যমে যোগাযোগ করে। মানুষের
সম্পর্ক ও সমাজে যন্ত্রের গা-ছমছমে
উপস্থিতির পাশাপাশি যোগাযোগের
বিশ্বায়ন সম্পর্কে তিনি যে পূর্বাভাস
করেছিলেন, কয়েক দশক পার করে তা-ই
বাস্তব দুনিয়ায় রূপ পেয়েছে
অন্তর্জালের মাধ্যমে।
৯) চন্দ্রাভিযানের পূর্বাভাস
মানুষ যে একদিন চাঁদে পা রাখবে তা
১৮৬৫ সালে ‘ফ্রম দ্য আর্থ টু দ্য মুন’
উপন্যাসে লিখেছিলেন বিশ্বখ্যাত
কল্পবিজ্ঞান লেখক জুল ভার্ন। ১০০ বছর
পর তার উপন্যাসে দেয়া চন্দ্রাভিযানের
বর্ণনার অনেকটাই মিলে যায় যখন
পৃথিবীর উপগ্রহের মাটিতে প্রথম ঘটে
মানব পদক্ষেপ। মহাকাশযানের আকার,
মহাকাশচারীর সংখ্যা, অভিযানের মোট
সময় এবং ভরশূন্যতার খুঁটিনাটি তথ্য
ভার্নের লেখায় আগেই পাওয়া
গিয়েছিল।
১০) ডিজিটাল নজরদারি
১৯৪৯ সালে তার উপন্যাস ‘১৯৮৪’-তে জর্জ
অরওয়েল ইন্টারকানেক্টেড নিরাপত্তা
ক্যামেরা জালের তত্ত্ব সম্পর্কে
লিখলে তা বহু পাঠক লেখকের কল্পনা
হিসেবে উড়িয়ে দিয়েছিলেন।  একুশ
শতকে সেই প্রকল্পই কিন্তু বাস্তবায়িত
হয়েছে।  মজার কথা, অরওয়েলের বাড়ির
মাত্র ২০০ গজের মধ্যে ৩২টি
সিসিটিভির সাহায্যে প্রথম এমন
পরিকল্পনা রূপ পায়।
১১) অঙ্গ প্রতিস্থাপন
ফের মিলে গেছে রবার্ট বয়েলের
ভবিষ্যদ্বাণী। ১৬৬০ সাল নাগাদ বয়েল
পূর্বাভাস করেছিলেন, ভবিষ্যতে
মানুষের দেহের বিভিন্ন অঙ্গ
প্রতিস্থাপনই হবে চিকিত্সার অন্যতম
প্রধান উপায়। জাদুবিদ্যা ও তুকতাক
সর্বস্ব সুদূর অতীতে তার এই ভবিষ্যদ্বাণী
অনেকের চোখ কপালে তুলেছিল।
বর্তমানে বয়েলের তত্ত্বই অনুসরণ করছে
আধুনিক চিকিত্সা বিজ্ঞান।
১২) লন্ডনের অগ্নিকাণ্ড ও নস্ত্রাদামু
১৫৫৫ সালে প্রকাশিত ‘লে প্রোফেতিস’
বইয়ে নস্ত্রাদামু লন্ডন শহরের ভয়ানক
অগ্নিকাণ্ডের কথা লিখে গিয়েছিলেন।
তার কথায়, ‘৬৬ সালে এই আগুনে
লন্ডনের শুভবুদ্ধি সম্পন্ন মানুষের রক্ত
পুড়বে। ১৯৬৬ সালের ৫ সেপ্টেম্বর
ব্রিটিশ রাজধানীতে ভয়ঙ্কর
অগ্নিকাণ্ডে হাজার হাজার মানুষ প্রাণ
হারান।
১৩) ঠাণ্ডা যুদ্ধের গল্প
‘সলিউশন আনস্যাটিসফ্যাক্টরি’ ছোট
গল্পে এমন এক আমেরিকার কথা
লিখেছিলেন রবার্ট হেইনলেইন যে দেশ
পৃথিবীর অন্য সমস্ত রাষ্ট্রের আগে
পরমাণু বোমা বানিয়ে দুনিয়ার একমাত্র
সুপার পাওয়ার হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হবে।
তার দেখাদেখি অন্য দেশগুলোও
তড়ঘড়ি এমনই শক্তিশালী বোমা তৈরির
চেষ্টা করবে বলেও তিনি লেখেন।
ইতিহাসের পরবর্তী অধ্যায়ে
বাস্তবায়িত হয়েছিল সাহিত্যিকের
দূরদৃষ্টি।
১৪) নিজের মৃত্যুর দিনক্ষণ আগেই
জানতেন মার্ক টোয়েন
নিজেকে কোনোদিন প্রফেট বা
আধ্যাত্মিক চরিত্র হিসেবে প্রচার
করেননি সাহিত্যিক মার্ক টোয়েন।
কিন্তু নিজের মৃত্যুর দিন ও সময় সম্পর্কে
তার ভবিষ্যদ্বাণী অক্ষরে অক্ষরে মিলে
যেতে দেখে হতবাক হয়েছিলেন সবাই।
টোয়েন লিখেছিলেন, ১৮৩৫ সালে তার
জন্মের সময় আকাশে হ্যালির ধূমকেতু
দেখা গিয়েছিল। তিনি
জানিয়েছিলেন, ধূমকেতুর
পুনরাবির্ভাবের সময় তার মৃত্যু হবে।
১৯১০ সালে মার্ক টোয়েনের
জীবনাবসানের সঙ্গে সঙ্গে রাতের
আকাশে ফের দেখা দেয় হ্যালিস কমেট।
সূত্র : এই সময় –

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ