Header Ads Widget

দেখার কেউ নেই- মাদারীপুর জেলার রাজৈর উপজেলার আমগ্রাম শাফিয়া শরীফ আস্তানায় চলছে অনৈতিক কর্মকান্ড,মদ গাজার আসর।

মাদারীপুর জেলার রাজৈর উপজেলার
আমগ্রাম শাফিয়া শরীফ আস্তানায় চলছে
অনৈতিক কর্মকান্ড,মদ গাজার আসর ও তার
ছেলের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও সন্ত্রাসের
অভিযোগ করেছে-পীর সাহেবের আপন
বোনের ছেলে শাওন ও কাকন
এদের চলে যেতে বলা হয়েছে তাদের
মারধোর করা হয়নি এবং অন্যান্য অভিযোগ
অস্বীকার করেছে-পীর সাহেব
টেকেরহাট রিপোর্ট=
মাদারীপুর জেলার রাজৈর উপজেলার
শাফিয়া শরীফ আস্তানায় মাজারের নামে
নিয়মিত মদ-গাঁজা ও জুয়ার আসর বসিয়ে
ব্যাবসা ও বিভিন্ন অসামাজিক কাজের
অভিযোগ করেছেন কথিত আমগ্রাম পীর
সাহেব সৈয়দ মাহতাব উদ্দিনের আপন
ভাগিনা শাওন করিম,আসিফুল করিম কাকন
তার পরিবারের লোকজন।
এছাড়া মাহতাব উদ্দিনের বড় ছেলে সৈয়দ
নবাবচাঁনের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী বাহিনী
পরিচালনাসহ বিভিন্ন সন্ত্রাসী
কর্মকান্ডেরও অভিযোগ করেন এই ভূক্তভোগী
পরিবারটি। এছাড়া পীর ব্যবসার মাধ্যমে
আড়াই হাজার কোটি টাকার মালিক হলেও
এই অর্থ-সম্পত্তির কোন রাজস্ব পরিশোধ
করেনি বলেও অভিযোগ উঠেছে।
এদিকে মাদারীপুর জেলার রাজৈর থানায়
১৭/০৬/২০১৫ইং তারিখ একটি মামলা দায়ের
করেন পীর সাহেব মাহতাবউদ্দিনের ভাগিনা
শাওন করিম যার মামলা নাম্বার ১২/১৮১।
এই মামলায় পীর সাহেবের বড় ছেলে সৈয়দ
নবাব চাঁদ (৪২)কে প্রধান আসামী করে মোট
৭জনকে আসামী করা হয়। অন্য আসামীরা
হলেন ২/সবুজ মিয়া,পিতা-আজিজুল মিয়া ৩/
রানা খান(২৬),পিতা সালাম খান ৪/ মন্টু
মিয়া(২৭)পিতা রত্তন মিয়া ৫/ ইকবাল
(২৭)পিতা অজ্ঞাত ৬/ আউয়াল(২৪) পিতা-
অজ্ঞাত ৭/ সোহেল(৩২)পিতা-অজ্ঞাত ।
এদিকে পীরের অঢেল অর্থ এবং রাজনৈতিক
ও সামাজিক প্রভাবের কারণে পুলিশের কাছ
থেকে আইনী সহযোগিতাও পাচ্ছেন না বলে
অভিযোগ নির্যাতিতদের।
মামলার কাগজপত্র ও লিখিত অভিযোগ সূত্রে
জানা গেছে, প্রায় ১০০ বিঘা জমির উপরে
আমগ্রাম শাফিয়া শরীফ দরবারের এক
পাশের সম্পত্তিতে পৈত্রিক সূত্রে থাকতেন
আমগ্রাম মরহুম পীরের মেয়ে সৈয়দা কামরুন
নেছা ও সৈয়দা মমতাজ বেগম।
বর্তমানে ওই সম্পত্তির মূল্য প্রায় ৫০ কোটি
টাকারও বেশি। তাদের পৈত্রিক ও মাতুল
সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করার জন্য দীর্ঘদিন
ধরে পায়তারা করে আসছিলেন পীর সাহেব
মাহতাবউদ্দিনের ছেলে নবাবচাঁন। আপন
ফুফাতো বোন,ভাই ও তার পরিবারকে
উচ্ছেদের জন্য গত ১৬ জুন সকালে সন্ত্রাসী
বাহিনী দিয়ে তার আপন ফুফাতো ভাই
আসিফুল করিম কাকনকে (৪৬) ঘর থেকে
ডেকে নিয়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে
মুমূর্ষু অবস্থায় ফেলে রাখে। এই হামলার
নেতৃত্ব দেন নবাবচাঁন।
পরে স্থানীয় এক ভ্যানচালক দয়া করে
আসিফুল করিম কাকনকে রাজৈর
হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করে। এরপর উন্নত
চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকায় পাঠানো হয়।
এই ঘটনায় মামলা দায়ের করা হলেও অজ্ঞাত
কারণে আসামীদের গ্রেপ্তার করছে না
পুলিশ।।অভিযোগ ভ’ক্তভোগী পরিবারটির।
পীর সাহেব মাহতাব উদ্দিনের ভাগিনা
শাওন করিম অভিযোগ করে বলেন, আমরা
চিন্তাও করতে পারিনি। অর্থ-সম্পত্তির
লোভে আমাদের বাড়ি-ঘর থেকে উচ্ছেদের
জন্য এমন বর্বর হামলা করতে পারে। নবাবচাঁন
যে কোন সময় আমাদের সবাইকে স্বপরিবারে
হত্যা করতে পারে। পীর সাহেব অঢেল
সম্পত্তির মালিক হয়েছেন যার পরিমাণ
আনুমানিক আড়াই হাজার কোটি টাকা। এর
বেশির ভাগই ভক্তদের থেকে প্রতারণা করে
আয় করা। তাদের বিভিন্ন কাজ করে দেবে
বলে কারো কারো কাছ থেকে ২ থেকে ২০
লাখ টাকাও আদায় করে থাকে।
ভক্তরা প্রতিকার পাওয়ার জন্য পীর
সাহেবের কাছে দোয়া চায় তখন সে বলে
নালিশী দিতে হবে তাহলে তোর আসা পূরণ
হবে কোন কাজ না হলেও পীর সাহেব তাদের
দেওয়া অর্থ ফেরত দেয় না।
প্রতিনিয়তই তার বাড়িতে ভন্ডামী হয়, আমরা
এই ভন্ডামীর প্রতিবাদ করায় আমাদের
উচ্ছেদ করতে চায়। বর্তমানে এই ভন্ড পীরের
বিরুদ্ধে স্থানীয় লোকজনসহ রাজৈর ও
মাদারীপুরবাসী জানেন। আমরা তার অন্যায়-
অত্যাচার থেকে মুক্তি চাই। আইন-শৃঙ্খলা
রক্ষাকারী বাহিনী, জনপ্রতিনিধিসহ সবাই
আমাদের রক্ষা করুন ও এই ভন্ড পীরের হাত
থেকে সমাজের অবুঝ মানুষদেরকে রক্ষা
করুন। পীর সাহেবের আপন ভাগিনা শাওন
করিম গত ২৩/০৭/২০১৫ইং তারিখ চেয়ারম্যান
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড সেগুন বাগিচা, ঢাকা
– ১০০০ বরাবর কর ফাঁকি দেওয়ার জন্য
অভিযোগ পত্র দিয়েছেন। অভিযোগ
পত্রটিতে লেখা রয়েছে-
বিনীত নিবেদন এই যে, মাদারীপুর জেলার
রাজৈর থানাধীন আমগ্রাম শফিয়া শরীফ
নামে একটি পীরের দরবার রয়েছে। যার
বর্তমান মালিক পীর মাহাতাব উদ্দিন
আহম্মেদ। তাহার অঢেল অবৈধ সম্মত্তি ও
বিপুল পরিমান নগদ অর্থ রয়েছে। কিন্ত
তদুপরি সে কোন রাজস্ব দেয় না। নিম্নে তার
সম্পত্তির বিবরণ দেওয়া হলো ঃ
০১। ধানমন্তি ১৫ নম্বওে ১০৯/৫/সি৫ম তলায়
একটি বিশাল বহুল বাড়ী আছে যার মূল্য প্রায়
৪০ কোটি টাকা। মাসিক ভাড়া বাবদ পায়
প্রায় ২ লক্ষ টাকা। কিন্ত বাৎসরিকভাবে কর
পরিশোধ করে না।
০২।ঢাকায় বনানী কবরস্থানের পাশে একটি
তিনতলা বিশাল বহুল বাড়ী রয়েছে। যার
আনুমানিক মূল্য ৫০ কোটি।
০৩। মাদারীপুরের টেকেরহাটে ০৫ টি বড়
দোকান রয়েছে ও ১৫ কাঠা জমি রয়েছে।
যার আনুমানিক মূল্য ৬ কোটি টাকা।
০৪। আমাগ্রাম দরবার শরীফে বিশাল বহুল
বাড়ী সহ প্রায় ১০০ বিঘা জমি রয়েছে। এ
জমির বাৎসরিক খাজনা ও পরিশোধ করে না।
আনুমানিক মূল্য মূল্য ৬০ কোটি টাকা।
০৫। পরানপুর দরবার শরীফে ১০০ বিঘা
জায়গা রয়েছে, যার আনুমানিক মূল্য ৫০
কোটি, এটি ও জোরপূর্বক হিন্দুদেও কাছ
থেকে দখল করে নিয়েছে।
০৬। মাদারীপুরের টেকেরহাটে অগ্রণী
ব্যাংক শাখায় বিপুল পরিমানে নগদ অর্থ
রয়েছে। আনুমানিক ২০ কোটির উপরে।
০৭। ঢাকার চাঁদনী চক মার্কেটে মনোমুগ্ধ ও
প্রভা জুয়েলার্স নামে দুটি বিশাল স্বর্ণেও
দোকান রয়েছে। যার আনুমানিক মূল্য ১০
কোটি টাকা। পীর সাহেব তার জায়গা
ব্যাবসা প্রতিষ্ঠানের স্বজনের সম্পত্তি
আতœসাৎ করেছে। এমতাবস্থায় পীরের
বিরুদ্ধে আয়কর না দেওয়ার কারণে যথাযথ
ব্যবস্থা গ্রহণ করার অনুরোধ করা হলো।
হত্যা-খুন ও পারিবারিক অন্তঃকোন্দল:
পীর মাহতাব উদ্দিনের ভাগিনা শাওন করিম
জানান, এক যুগ আগে স্থানীয় আবুল নামের
এক ব্যক্তিকে চোখ উপড়ে ফেলে ও মারধর
করে হত্যা করে পীর মাহতাবউদ্দিনের বড়
ছেলে নবাবচাঁন। সেই হত্যা মামলার প্রধান
হুকুমের আসামী সে। নিহত আবুলের
পরিবারকে হুমকি-ধামকি দিয়ে মামলা
পরিচালনা থেকেও বিরত থেকে এই
প্রভাবশালী ভন্ড পীর ও তার ছেলের
সন্ত্রাসীবাহিনী। ওই হত্যা মামলাটি এখনও
ধামাচাপা অবস্থায় আছে।
এছাড়া অর্থ-সম্পদ ও প্রভাব প্রতিপত্তি
নিয়ে এর আগে পীর মাহতাব উদ্দিনের দুই
ছেলের মধ্যে দ্বন্দ্ব চলে আসছিল। মাঝে
মধ্যেই ঝগড়া-বিবাদ ও মারামারির ঘটনা
ঘটতো। এছাড়া অতিরিক্ত মদ-গাঁজা খেয়ে
তার আরেক ছেলে কালাচাঁন দিন-রাত
উল্লাস করে বেড়াত। একদিন হঠাৎ করে
কালাচাঁদ রহস্যজনকভাবে মারা যান। এই
ঘটনায় তার বড় ছেলে নবাব চাঁনের হাত আছে
বলে তখন গুনজন ওঠে। ভন্ড পীর এতটাই
নোংরা, অর্থলোভী ও বিকৃত মানসিকতার
যে, ছেলের দাফনের দিন ছেলের লাশ
দেখিয়েও অবুঝ ভক্তবৃন্দের কাছ থেকে
টাকা আদায় করেছেন।
স্থানীয় ও অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে,
বাৎসরিক ওরশের সময় বিভিন্ন ধরণের
ভন্ডামীর কাজ হয়ে থাকে। এছাড়া এখানে
ইসলামবিরোধী বিভিন্ন কর্মকান্ড হয়ে
থাকে। ভন্ডামী করে কোটি কোটি টাকা
আয় করলেও কোন মসজিদ নির্মাণ সম্পন্ন
করে না। ২০বছর আগে একটি মসজিদ নির্মান
করে ছাদ দিয়ে ফেলে রেখেছে। মসজিদটি
বর্তমানে গরুর ঘর হিসাবে ব্যবহার করছেন।
পীর সাহেব মাহতাব উদ্দিন গদীর উপরে
আধাশোয়া অবস্থায় থাকেন এবং তার
ভক্তবৃন্দ পায়ে মাথা ঠেকিয়ে সালাম করছে।
এদিকে সাম্প্রতিক হামলার ব্যাপারে
জানতে চাইলে রাজৈর থানার ওসি
আনোয়ার হোসেন ভূঞা বলেন, পীর সাহেবের
বাড়িতে পারিবারিক কলহের জেরে হামলার
ঘটনায় যে মামলা হয়েছে, তার তদন্ত করে
উপযুক্ত আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ